বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৩

যাতায়াত




যাতায়াত
                      কবি- হেলাল হাফিজ
                       আবৃত্তি- শিমুল মুস্তাফা



কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো

কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না
রাত কাটে তো ভোর দেখি না
কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না কেউ জানে না

নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম
পেছন থেকে কেউ বলেনে করুণ পথিক
দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও,
কেউ বলেনি ভালো থেকো সুখেই থেকো
যুগল চোখে জলের ভাষায় আসার সময় কেউ বলেনি
মাথার কসম আবার এসো

জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো
শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক,
চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি
বললো না কেউ তরুণ তাপস এই নে চারু শীতল কলস 


লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম

ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয়
আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই
দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শূশ্রুষাহীন

কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি

বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৩





নিঝুম রাত
                                                               কন্ঠ- মাহাদী ও এলিটা

নিঝুম রাত অথবা ব্যস্ত দিন
তুমি ছাড়া পৃথিবী অর্থহীন।

তুমি ছাড়া চারিদিকে অথৈ অন্ধকার
তুমি প্রথম তুমি আমার সংসার।
তুমি ভালবাসার নিঝুম পাড়ে প্রানের যেন স্পর্শ লাগা
তুমি অনুভবের তেপান্তরে সারারাত্রি নির্ঘুম জাগা।

স্বপ্নের রং অথবা বিষাদ কালো,
তুমি ছাড়া কিছুই লাগেনা ভাল।

রবিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৩

মেঘবালিকার জন্য রূপকথা

 

মেঘবালিকার জন্য রূপকথা 

                                      - জয় গোস্বামী 

আমি যখন ছোট ছিলাম খেলতে যেতেম মেঘের দলে,
একদিন এক মেঘবালিকা, প্রশ্ন করলো কৌতুহলে- 
"এই ছেলেটা নাম কি রে তোর??" 
আমি বললেম, "ফুসমন্তর" 
মেঘবালিকা রেগেই আগুন-
"মিথ্যে কথা, নাম কি ওমন হয় কখনো??" 
আমি বললেম, "নিশ্চই হয়, আগে আমার গল্প শোন!!" 
সে বললো, "শুনব না যা-"
"সেই তো রাণী, সেই তো রাজা-"
"সেই তো একি ডাল-তলোয়ার"
"সেই তো একি রাজার কুমার পক্ষীরাজে"
"শুনব না যা ওসব বাজে"  
আমি বললেম, "উম্‌ তোমার জন্যে নতুন করে লিখব তবে!
"সে বললো, "সত্যি লিখবি??"
"বেশ! তাহলে মস্ত করে লিখতে হবে!"
"মনে থাকবে? লিখে কিন্তু আমায় দিবি"
আমি বললেম, "তোমার জন্য লিখতে পারি এক পৃথিবী"
 
  লিখতে লিখতে লেখা যখন সবে মাত্র দু'চার পাতা
হঠাৎ তখন ভূত চাপলো আমার মাথায়
খুঁজতে খুঁজতে চলে গেলাম ছোটবেলার মেঘের মাঠে
গিয়ে দেখি চেনা মুখ তো একটিও নেই এই তল্লাটে।
একজনকে মনে হল ওরি মধ্যে অন্যরকম
এগিয়ে গিয়ে বললেম তাকে, "তুমি কি সেই?? মেঘবালিকা, তুমি কি সেই??"
সে বললো, "মনে তো নেই, আমার ওসব মনে তো নেই"
আমি বললেম, "তুমি আমায় লেখার কথা বলেছিলে" 
সে বললো, "সঙ্গে আছে? ভাসিয়ে দাও গাঙের ঝিলে-"
"আর হ্যাঁ শোন..এখন আমি মেঘ নই আর..."
"সবাই এখন বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়..."
বলেই হঠাৎ, এক পশলায় 
চুল থেকে নখ আমায় পুরো ভিজিয়ে দিয়ে
অন্য অন্য বৃষ্টি বাদল সঙ্গে নিয়ে  
মিলিয়ে গেলো খরস্রোতায়, মিলিয়ে গেল  
দূরে কোথায়, দূরে, দূরে...
"বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়..বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়" 
 
আপন মনে বলতে বলতে আমি কেবল বসেই রইলাম 
ভিজে একশা কাপড় জামায় 
গাছের তলায় বসেই রইলাম,
বৃষ্টি নাকি মেঘের জন্য??
এমন সময় অন্য একটি বৃষ্টি আমায় চিনতে পেরে বললো,
"তাতে মন খারাপের কি হয়েছে??"
"যাও ফিরে যাও, লেখো আবার"
"এখন পুরো বর্ষা চলছে"
"তাই আমরা সবাই এখন নানান দেশে ভীষণ ব্যস্ত"
"তুমি-যাও মন দাও গে তোমার কাজে"
"বর্ষা থেকে ফিরে আমরা নিজেই যাবো তোমার কাছে" 
 
  এক পৃথিবী লিখবো আমি 
এক পৃথিবী লিখবো বলে ঘর ছেড়ে সেই বেড়িয়ে গেলাম। 
ঘর ছেড়ে সেই ঘর বাঁধলাম গহন বনে 
সঙ্গী শুধু কাগজ কলম 
একাই থাকবো, একাই দুটো ফুটিয়ে খাবো 
দু এক মুঠো ধুলোবালি 
যখন যারা আসবে মনে তাদের লিখবো, লিখেই যাবো  
এক পৃথিবীর একশো রকম স্বপ্ন দেখার
 সাধ্য থাকবে যেই রূপকথার
সেই রূপকথা 
আমার একার।
 
  ঘাড় গুঁজে দিন লিখতে লিখতে 
ঘাড় গুঁজে রাত লিখতে লিখতে 
মুছেছে দিন 
মুছেছে রাত 
যখন আমার লেখবার হাত অসাড় হলো 
মনে পরলো সাল কি তারিখ 
বছর কি মাস সেসব হিসেব আর ধরিনি। 
লেখার দিকে তাকিয়ে দেখি 
এক পৃথিবী লিখবো বলে একটা খাতাও শেষ করিনি। 
সঙ্গে সঙ্গে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল, খাতার উপর 
আজীবনের লেখার উপর 
বৃষ্টি এল এই অরণ্যে।
 
  বাইরে তখন গাছের নীচে নাচছে ময়ূর আনন্দিত 
এ-গাছ ও-গাছ উড়ছে পাখি 
বলছে পাখি, "এই অরণ্যে কবির জন্য আমরা থাকি" 
বলছে ওরা, "কবির জন্য, আমরা কোথাও, আমরা কোথাও, আমরা কোথাও হার মানিনি" 
কবি তখন কুটির থেকে 
তাকিয়ে আছে অনেক দূরে 
বনের 'পরে, মাঠের 'পরে, নদীর 'পরে 
সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পরে, বৃষ্টি পরে 
সেই যেখানে কেও যায়নি 
কেও যায়না কোনদিনি 
আজ সে কবি দেখতে পাচ্ছে
সেই দেশে সেই ঝর্ণাতলায় 
এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায় 
সোনায় মোড়া মেঘ হরিণী
কিশোর বেলার সেই হরিণী

রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আজি বিজন ঘরে ~ ~ ~

অনেক দিন পরে মনটা অসম্ভব ভালো, অফিসে কাজের চাপ নেই, হৈ চৈ শব্দ নেই, নিজের কম্পিউটারে রবীন্দ্র সংগীত শুনছি। এমন দিন গুলো খুব সহজে পাওয়া যায়না আর, সব থেকেও মাঝে মাঝে নিজের মনের অবস্থা ঠিক থাকেনা তখন অনেক কিছুই আর করতে ইচ্ছে করেনা। অনেকদিন পরে অন্য বন্ধুদের ব্লগে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগছে, তাদের নতুন লেখা পড়ছি। এমন ভালো লাগা দিন গুলো প্রতিদিন কেন আমাদের জীবনে আসেনা, এখন যে গানটি শুনছি এখানে রেখে গেলাম............




আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্য হাতে
আমি তাইতে কি ভয় মানি !
জানি জানি, বন্ধু , জানি
তোমার আছে তো হাতখানি॥
চাওয়া-পাওয়ার পথে পথে দিন কেটেছে কোনোমতে,
এখন সময় হল তোমার কাছে আপনাকে দিই আনি॥
আঁধার থাকুক দিকে দিকে আকাশ-অন্ধ-করা,
তোমার পরশ থাকুক আমার-হৃদয়-ভরা।
জীবনদোলায় দুলে দুলে আপনারে ছিলেম ভুলে,
এখন জীবন মরণ দু দিক দিয়ে নেবে আমায় টানি

মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১১

' Unbreak My Heart' - Toni Braxton




Don't leave me in all this pain
Don't leave me out in the rain
Come back and bring back my smile
Come and take these tears away
I need your arms to hold me now
The night are so unkind
Bring back those nights when I held you beside me

Un-break my heart
Say you'll me again
Undo this hurt you caused
When you walked out the door
And walked out of my life
Un-cry these tears
I cried so many nights
Un-break my heart
My heart

Take back that sad word good-bye
Bring back the joy to my life
Don't leave me here with these tears
Come and kiss that pain away
I can't forget the day you left
Time is so unkind
And life is so cruel without you here beside me

Un-break my heart
Say you'll love me again
Undo this hurt you caused
When you walked out the door
And walked out of my life
Un-cry these tears
I cried so many nights
Un-break my heart
My heart

Don't leave me in all this pain
Don't leave me out in the rain
Bring back the nights when I held you beside me

Un-break my heart
Say you'll love me again
Undo this hurt you caused
When you walked out the door
And walked out of my life
Un-cry that tears
I cried so many, many nights
Un-break my

Un-break my heart
Come back and say you love me
Un-break my heart
Sweet darling'
Without you I just can't go on
Can't go on

~ ~ ~ ~

সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১০

যেমন আছি এখন___

অনেকদিন কিছুই লেখা হয়না, ইচ্ছে গুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে বসেছে। সারাটা দিন অফিসে কাটিয়ে আর কোন শখ বা ইচ্ছের ডানা মেলে দিতে মন চায়না। এই কাজ আমার সব নিল, ইচ্ছে মতো ঘুড়ে বেড়ানো, ইচ্ছে মতো ঘুমানো, ইচ্ছে মতো গান শোনা আরো আরো কত কি। সব কিছুই চলছে নিয়ম মাফিক, বড্ড হাপিয়ে উঠি এই নিয়মের বেড়া জালে আটকে পড়ে।

কয়েকদিন হতে বৃষ্টির আশা করছিলাম ভীষন, অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা পেলাম গতকাল সকালে, ঘুমটাই ভেঙ্গেছে মেঘের গুরুম গুরুম শব্দে। বারান্দায় বেরিয়ে দেখি কিসের কি, মেঘ গুলো সব দক্ষিনের হাওয়ায় উত্তরে ভেসে যাচ্ছে, তাই দেখে মনে মনে বলছিলাম একটু বৃষ্টি হলে কি এমন হতো। নিজের মনেই মেঘগুলোর বেশ এক হাত নিয়ে নিলাম। বেলী ফুল গাছটা ফুল ফুটে সাদা হয়ে আছে, তাই দেখে মনটা আনন্দে ভরে গেল, সেই ফুলে নাক ডুবিয়ে প্রান ভরে সুঘ্রান নিলাম, আহ কি মিষ্টি সুগন্ধি।

আজ খেলা ভাঙ্গার খেলা, খেলবি আয় আয় আয়
সুখের বাসা ভেঙ্গে, খেলবি আয় আয় আয়_________ বাহ্ মন্দ লাগছেনা নিজের মনে গুনগুনিয়ে উঠতে। হুমম রবীন্দ্র রচনাবলীটা অনলাইনে খুঁজে পাচ্ছিনা কয়েকদিন হতে, মনে পড়ল ওটা আজ খুঁজতে হবে।

অবশেষে বৃষ্টির দেখা পেলাম আমার শহরে, তাও কখন? যখন আমি অফিসের বের হবো ঠিক তখুনি। মৌসুমের প্রথম বৃষ্টির ছোঁয়া উপভোগ করবার সৌভাগ্য হলোনা আমার কারণ ----- আবার সেই কাজ।
এতো সবকিছুর পরেও আবার সেই কাজ আমায় প্রতি নিয়ত বেঁচে থাকার প্রেরনা যোগায়, ভুলে থাকতে সাহায্য করে আমার অনেক দুঃসহ কষ্টের স্মৃতি।

বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০০৮

মনের ভাবনা ।

ইদানিং কেন জানিনা লিখতে ভাল লাগেনা। লিখতে বসেও দেখা যায় কোন বই, ম্যাগাজিন এইসব পড়ি, খুব মনযোগ দিয়ে পড়ি তাও নয়। গত বছর ডিসেম্বর মাসে যা ঘটেছে তার পর থেকে ডিসেম্বর মাস বললেই আতঙ্কিত বোধ করতাম। সবসময় শঙ্কা কাজ করতো মনে এই বুঝি আবার কোন বিপদ চলে আসে কিনা তাই ভেবে। অবশেষে দেখতে দেখতে কেটে গেল মাসটি শুধু তা নয় পুরো বছরটাও শেষ হয়ে গেল। কি পেয়েছি আর কি হারিয়েছি তার হিসাব কষতে গেলে দেখা যাবে আমার হারানোর দিকের পাল্লাটি একটু বেশী ঝুঁকে থাকবে।


এক পায়ে নূপুর আমার অন্য পা খালি
এক পাশে সাগর এক পাশে বালি
তোমার ছোট তরী বল নেবে কি?


বেজেই চলছে গানটি আর মনে মনে ভাবছি আহা আমায় যদি কেউ এইভাবে আকুল হয়ে ডাক দিতো তবেতো দিতাম ছুট। অনেকটা দিন পেরিয়ে গেল কোথাও যাওয়া হয়না। নিত্যদিন অফিস গিয়ে সেই একই নিয়ম মাফিক সব কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে বিরক্ত লাগছে। এই ডিসেম্বরে অফিস করেছি অনেক কম তবুও কেমন যেন লাগছে, ঠিক বোঝানো যায়না অনুভুতি গুলো।


যদি বন্ধু হও যদি বাড়াও হাত
যেন থামবে ঝড় মুছে যাবে রাত
হাসি মুখ তুলে অভিমান ভুলে
রাঙা সূর্য্য বলবে সুপ্রভাত।
সবার রঙে মিশলে রং
সুরে মিললে সুর হবে
পুরনো যত দ্বিধা দ্বন্ধ দুর
যদি ভাগ করে নাও দুঃখ সুখ
বোঝ তোমার আমার নেই তফাৎ।
হাসি মুখ তুলে অভিমান ভুলে
রাঙা সূর্য্য বলবে সুপ্রভাত।


শুভমিতা গেয়ে চলেছে বন্ধু নিয়ে চমৎকার একটি গান। আগামী কাল নতুন একটা বছর প্রবেশ করবে, সব কিছুই নতুনভাবে শুরু করতে হবে জানি। এমন কত নতুন বছরকে বরণ করেছি সব বন্ধুরা একসাথে মিলিত হয়ে গানে গানে আর হৈ হুল্লোর করে। এখন কে কত দুরে চলে গেছে, মুঠো ফোনে শুধু কয়েক লাইনের বার্তা পাঠিয়েই আমরা আমাদের বন্ধুতা রক্ষা করে চলেছি। 

বাংলাদেশের জন্য নতুন বছরটি বয়ে আনুক অনেক অনেক শুভ বার্তা। দেশের জনগণ নতুন একটি সরকার এনেছে, বিজয়ের মাসে আরেকটি বিজয় নিয়ে এলো আমাদের দেশবাসী। এবার ভোট দিতে গিয়ে কোন লোকজনকে আতঙ্কগ্রস্ত হতে দেখিনি সেটাই ছিল অনেক ভাল লাগার ব্যাপার। দুপুর বেলা ভোট দিতে গেলে নিজের ভোট অন্য লোক দিয়ে দেবে তাই ভেবেও কেউকে দেখিনি চিন্তিত হতে। যারা এবার প্রথম ভোট দিল তাদেরও উৎসাহের কমতি ছিলনা দেখেছি। তাই বর্তমান প্রজন্মের অনেক অবদান রয়েছে নতুন এই সরকার গঠনের ব্যাপারে। সুন্দর সু-শৃংখল ভাবে লোকজন ভোট দিচ্ছিল তাই দেখতে ভীষন ভাল লাগছিল। তখন মনে হচ্ছিল আমাদের দেশের জনগণ চাইলে কি-না করতে পারে। 

প্রার্থনা করি নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধি। সবার জীবন ভরে থাক ভালবাসা আর স্নেন মমতায়।